ওভারথিংকিং আপনার মস্তিষ্কে তখনই জায়গা করে নেয়, যখন আপনি আপনার কোনো প্রবলেম বুঝতে পারেন না এবং প্রবলেমটা আইডেন্টিফাই করতে ব্যর্থ হোন। অনিয়ন্ত্রিত চিন্তাভাবনা এই সুযোগে আপনার মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে। এই ধরণের চিন্তাভাবনা মাথা থেকে যেতেই চায় না। ফলে একটি লুপের ভেতরই আপনি আটকে থেকে মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেন।
আপনার চিন্তাভাবনার সহজাত প্রক্রিয়ার কারণে প্রায় সময়ই আপনি সর্বনাশা ভাবনাকে নিজের মাথায় জায়গা করে দেন। আপনি সবসময়ই নজর দেন কী হওয়া উচিত, কী হয়ে গেলো, কী হতে পারতো—এই ধরণের সিচুয়েশনের প্রতি। ফলে সপ্তাহে সাতদিন, দিনে চব্বিশ ঘন্টাই নানা ধরণের জল্পনা কল্পনা করে আপনার দিন কাটতে থাকে। এখান থেকেই অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার শুরু। প্রথমদিকে ব্যাপারটা কম মাত্রার হলেও ধীরে ধীরে এই লুপহোল থেকে বের হওয়া আপনার পক্ষে আর সম্ভব হয়ে ওঠে না, অথবা বলতে পারেন আপনি বের হতে জানেন না। অতিমাত্রায় চিন্তা শুধু আপনার মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে, এমন কিন্তু নয়। এটি আপনার বিশ্বাসকেও ধীরে ধীরে দুর্বল করতে থাকে। ফলে আপনি একসময় আর নিজের ভেতর আত্মবিশ্বাস খুঁজে পান না।
অতিমাত্রায় চিন্তা একজন মানুষকে দুশ্চিন্তা, হতাশা এবং অন্যান্য মানসিক রোগের দিকে ঠেলে দিতে পারে। একজন ব্যক্তি যখন এই অবস্থায় পৌঁছে যায়, তখন নিজের দায়দায়িত্ব নিয়েও তার মাঝে নানারকম শঙ্কা আসতে শুরু করে। সে সারাক্ষণই ভাবতে থাকে—যদি আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতাম, যদি তারা ভালো মানুষ হতো, যদি আমি নিজের জীবনকে আরো সুন্দর করে তোলার জন্য কাজ করতাম। এই ধরণের ‘যদি’ টাইপ কথাবার্তা সবসময়ই সে নিজেকে বলে থাকে।
আপনাকে মনে রাখতে হবে, চিন্তাভাবনাই ঠিক করে দেয় আপনি কে এবং আপনি কী হতে চান। চিন্তাভাবনা আপনার কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে, আর কাজ তৈরি করে তদনুযায়ী চরিত্র। প্রতিদিন আমাদের মস্তিষ্ককে নানারকম চিন্তাভাবনার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এদিক থেকে বলতে গেলে আমাদের মস্তিষ্ক সবসময় সচলাবস্থায় থাকে। একটার পর একটা চিন্তা মস্তিষ্কে আসতেই থাকে। উদাহরণ হিসেবে নিচের ব্যাপারটাই ধরেন—
আমি যদি আপনাকে জিজ্ঞেস করি—আপনি কি অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করেন? এই প্রশ্নের জবাবে আপনি হয়তো ভাববেন আপনি করেন। তারপর আবার ভাবনা শেষ করে বলবেন, আপনি করেন না। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। একটু পর আপনি নিজেই নিজের চিন্তাভাবনাকে আরো বাড়িয়ে দিয়ে বলতে শুরু করবেন—আমি কি আসলেই ওভারথিংকিং করি? দেখলেন তো চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়াটি কীভাবে কাজ করতে থাকে? প্রায় সবার ক্ষেত্রেই এমন হয়। না চাইতেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে একের পর এক চিন্তাভাবনা আসতে থাকে। কিছু মানুষ অতিমাত্রায় চিন্তা করা ব্যতীত চলতেই পারে না। মানসিক যন্ত্রণা এবং ওভারথিংকিং তাদের জীবনের নিত্যসঙ্গী। জেনে রাখা ভালো, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা বাঁ ওভারথিংকিং কখনোই ভালো নয়। একবার যদি আপনি এসবে জড়িয়ে যান, তাহলে নানারকম প্রবলেমে ভুগবেন। এটি প্রতিরোধ করা দুরূহ ব্যাপার, কখনো কখনো আবার অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আগেভাগেই তাই সাবধান হতে হবে আপনাকে।
এখন তাহলে জেনে নেয়া যাক অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার নানাবিধ লক্ষণ সম্পর্কে
যেসব লক্ষণ দেখলে সচেতন হওয়া জরুরী—
অনিদ্রা
একজন মানুষ ঠিক তখনই অনিদ্রায় ভোগে, যখন নিজস্ব চিন্তাভাবনার লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়। আপনি সারাদিন কাজ করেন। রাতে আপনার জন্য ঘুম জরুরী। শরীর ক্লান্ত থাকে। বিশ্রাম ঐ মুহূর্তে একটা নিয়ামক। কিন্তু বিছানায় গেলে দেখা যাবে আপনার চোখে ঘুম নেই, শত চেষ্টা করেও ঘুমাতে পারছেন না। এটা হওয়ার কারণ চিন্তার বন্যা আপনাকে গ্রাস করতে থাকে। সারাদিন পর এখনও আপনি কী করেননি, কী করতে চান, কোন কাজটি আরো ভালো করতে পারেন—আপনার মাথায় এসব ভাবনা এসে জড়ো হয়। এসব চিন্তাভাবনা আপনি হয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, অথবা নিয়ন্ত্রণ করেন না। ফলে চিন্তাভাবনার ফাঁদে আটকে যান। এগুলোই আপনাকে অনিদ্রার দিকে ঠেলে দেয়।
দুশ্চিন্তাযুক্ত জীবনযাপন
ওভারথিংকিং-এর আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে দুশ্চিন্তার ভেতর দিয়েই জীবনযাপন করতে থাকা, কোনো স্বস্তিদায়ক সিদ্ধান্তে আসতে না পারা। এটা তখনই হয়, যখন আপনি নিজের জীবন সম্পর্কে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত বা স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আসতে ব্যর্থ হন। বেশিরভাগ মানুষই এমতাবস্থায় নেশা করে, মদ খায় এবং ওষুধের সাহায্যে নিজেকে স্বস্তি দেবার চেষ্টা চালায়।
আপনার জীবন যদি প্রতিনিয়তই দুশ্চিন্তার ওপর কাটতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আপনি অজানা অনাগত সময়কে ভয় পাচ্ছেন, সেই ভয়কে অবলম্বন করে নিজের জীবন কাটাচ্ছেন। এই ভয়কে জয় করতে না পারার ব্যর্থতাই আপনাকে দুশ্চিন্তাযুক্ত সময়ে আটকে রাখছে।
সবকিছু নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা
পূর্বের লক্ষণটির মতোই নিজের সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করার আকাঙ্ক্ষা ওভারথিংকিংর আরেকটি লক্ষণ। সবকিছু নিজের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়ার মানে হচ্ছে আপনি ভবিষ্যতকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান, অথচ ভবিষ্যত সবসময়ই অজানা বিষয়।
অন্য সব মানুষের মতো আপনিও সবসময় চিন্তা করেন ব্যর্থতাকে এড়ানোর জন্য। পৃথিবীর সকল মানুষই এই ধরণের আকাঙ্ক্ষা নিজের মাঝে জড়িয়ে রাখে। আজকে যদি আপনি ব্যর্থ হোন, তাহলে কালকে নিশ্চয়ই ব্যর্থ হতে চাইবেন না। আগামীকাল আপনার সাথে একই ব্যাপার না ঘটুক, এই তাড়না থেকেই নিজেকে সর্বোচ্চ অত্যাচার করে ফেলেন আপনি। আপনার কাছে মনে হয় আপনি সব ঠিকঠাক করতে পারবেন। কিন্তু সত্যি বলতে ভবিষ্যত আপনার হাতে নেই। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার আকাঙ্ক্ষা থেকে সৃষ্ট তাড়না আপনাকে বর্তমানে স্বস্তিতে বাঁচতে দেয় না। আপনি স্বস্তিতে থাকতে পারেন না। এমনকি এটা আপনাকে পরিবর্তন হতেও সক্ষম করে তোলে না। পরিবর্তন বেশ পরিকল্পিত জিনিস। এটির জন্য ছক আঁকতে হয়। কাজ করতে হয়। তবে আপনি যদি সেসব বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে যান, সেক্ষেত্রে পরবর্তী সফলতাও আপনার হাতছাড়া হতে পারে।
পারফেকশনিজম (খুঁতখুঁতে স্বভাব)
অনেকেই আছেন নিজের কাজ নিয়ে সর্বোচ্চ আগ্রহী এবং উৎসাহী হয়ে থাকেন। সূক্ষ্মভাবে কাজ করেন। কিন্তু সবকিছুর মাত্রা থাকে। অতিমাত্রায় সূক্ষ্মতা খোঁজা পারফেকশনিস্টরা নিজের কাজে ছোট ছোট খুঁত পর্যন্ত মেনে নিতে পারে না। তারা ব্যর্থতাকেও মানতে পারে না। ফলে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানো তাদের জন্য জটিল হয়ে যায়। তারা ঝুঁকি নিতে ভয় পায়। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চায়। কিন্তু পারে না। সবসময়ই কিছু নষ্ট হওয়ার ভয় তাদেরকে আতঙ্কের ওপর রাখে। আপনার মাঝে যদি এই ধরণের স্বভাব বেড়ে উঠতে থাকে, তাহলে বুঝবেন আপনি অতিমাত্রায় চিন্তার ফাঁদে আটকে গেছেন।
সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকা
ওভারথিংকিংর জোয়ারে ডুবে আছেন তারই অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে ক্রমাগত সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকা। যেকোনো কিছু নিয়ে একের পর এক বিশ্লেষণ, বারবার সিদ্ধান্ত বদলানো, আবার বিশ্লেষণে ডুবে থাকার কাজটিও ওভারথিংকিংর ফসল। এসব আপনার আত্মবিশ্বাসহীনতার কথাই জানান দেয়। আপনার আত্নবিশ্বাস হারিয়ে যেতে থাকে ওভারথিংকিংর কারণে। ফলে আপনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন।
মাথাব্যথা
অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তায় ডুবে থাকার অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে মাথাব্যথা। আমাদের মস্তিষ্ক বেশি চাপ নিতে সক্ষম নয়। আপনি যদি দুশ্চিন্তায় ডুবে থাকেন, তাহলে আপনার মাথাব্যথা হতে পারে। এটা নিয়মিতই ঘটবে। মাথাব্যথা হওয়ার মানেই হচ্ছে ওভারথিংকিং আপনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। এমতাবস্থায় আপনার বোঝা উচিত আপনাকে বিরতি নিতে হবে, স্বস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নতুনভাবে নিজের সকল কার্যপরিকল্পনা সাজাতে হবে।
নানারকম শারীরিক সমস্যা
ওভারথিংকিং আপনাকে দুশ্চিন্তার দিকে ঠেলে দেয়। দুশ্চিন্তা এনে দেয় মানসিক চাপ, যন্ত্রণা। ফলে আপনার অভ্যন্তরে একটি নেগেটিভ সাইকেল চলমান থাকে। আপনি হতাশ হয়ে যান, নিজের মনোদৈহিক সকল প্রয়োজন আপনার মাথা থেকে দূর হয়ে যায়। ফলে আপনি দৈহিক কোনো প্রয়োজন বুঝতে পারেন না। এতে করে আপনার শরীরে নানারকম ব্যথা অনুভূত হতে পারে, যন্ত্রণা বোধ করতে পারেন আপনি। আপনার হাড়ে দুর্বলতা সৃষ্টি হয়। শক্তি কমে আসে। এসব কারণে অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কাজে মনোযোগ হারাবেন। পরিশ্রান্ত হয়ে উঠবেন। প্রতিনিয়তই এমন প্রবলেম ফেইস করার বিষয়টি জানান দেয় আপনি ওভারথিংকিং-এ আছেন।
ক্লান্তি/পরিশ্রান্তি
আপনার অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তার ভেতরে থাকার অন্যতম একটি লক্ষণ হচ্ছে এটি। এমতাবস্থায় নিজেকে আপনার রোবট বলে মনে হবে। অথচ মানুষের জীবন রোবোটিক হলে সেটা সমস্যাজনক। একজন মানুষ সবসময়ই ক্লান্তির ভেতর থাকা মানেই তার সকল কার্যক্রম ভেস্তে যাওয়া। মানুষকে অবশ্যই সময়ে সময়ে নিজের জীবনে আমেজ ফিরিয়ে আনার কাজটি করতে হবে। নয়তো সবকিছুই শেষ হয়ে যাবে। আর এটা আপনি কখনোই করতে পারবেন না, যদি আপনি অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তায় লিপ্ত হয়ে যান এবং দুশ্চিন্তা আপনাকে গ্রাস করে ফেলে।
বর্তমানে উপস্থিত থাকতে না পারা (উদাসীনতা)
আপনার কি কখনো এমন মনে হয়েছে যে, আপনি কারো কথা শুনতে চাচ্ছেন কিন্তু শুনতে পারছেন না? এমন কি কখনো হয়েছে আপনি স্ত্রী, সন্তানদের সাথে হৈ-হুল্লোড় করে সময় কাটাতে চাচ্ছেন, কিন্তু আপনার মনে হচ্ছে আপনি বাস্তবে অনুপস্থিত? আপনার চিন্তাভাবনা কি কখনো আপনাকে বর্তমান সময়কে উপভোগ করতে বাঁধা অনুভব করাচ্ছে? এমন হয়ে থাকলে নিশ্চিত থাকুন আপনি দুশ্চিন্তার সুন্দর জগতে আটকে গেছেন। এটা বেশ ভালো, তাই না? হুহ, একদমই না! বরং ওভারথিংকিং আপনাকে নিজের জীবন উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত করে ফেলে, আপনি তাড়াহুড়ো করতে থাকেন, প্রতিটি মুহূর্ত থেকে আপনার ফোকাস সরে যায়। ফলাফল হিসেবে অস্থিরতা ব্যতীত আর কিছুই আপনার কপালে জোটে না।
আপনি হয়তো একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন যে, অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তা করা একজন ব্যক্তি হওয়ার সকল লক্ষণগুলো একটি আরেকটির সাথে সম্পর্কযুক্ত।
উদাহরণস্বরূপ—নিজের আত্মবিশ্বাসহীনতা এবং ব্যর্থ হওয়ার ভয় থেকে সৃষ্ট বিশ্লেষণ বারবার আপনাকে দুশ্চিন্তার দিকে ঠেলে দেয়, যেভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার আকাঙ্ক্ষা থেকে অজানা ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা করাটাও আপনাকে ব্যর্থ হওয়ার ভয়ের দিকেই ঠেলে দেয়। এরপর এসবের জন্য আপনার মাথাব্যথা শুরু করবে। মাথাব্যথা থেকে উৎপত্তি হবে অনিদ্রার। অনিদ্রা ফের আপনাকে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত করে দেবে। ফলে আপনি প্রতিটি মুহূর্তই উদাসীন থাকবেন। বর্তমানকে উপভোগ করার মতো সক্ষমতা আপনার আর থাকবে না।
অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তা করা বেশ বিপজ্জনক। ইতোমধ্যেই আমি আপনাকে জানিয়েছি, এটি কখনো কখনো আমাদের অজান্তেই জায়গা করে নেয় মস্তিষ্কে। একসময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তবে এখনও আমাদেরকে আশাবাদী হতে হবে। আশাবাদী হওয়ার দ্বারাই আমরা নিজেকে মুক্ত করার প্রয়াস চালাতে সক্ষম।
আমার এই সিরিজের সবগুলো লেখা পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন নিজের মাঝে কী কী পরিবর্তন আনা জরুরী এবং কীভাবে নিজেকে ভয়ডরহীন দুশ্চিন্তামুক্ত একটি জীবন উপভোগ করতে পারবেন। আমি আপনাকে বলছি আমার এই কথা ও লেখাগুলোকে গাইড হিসেবে গ্রহণ করার জন্য। এখানে নানা বিষয়ের উল্লেখ থাকবে। আপনি যদি সেসব নিজের জীবনে কাজে লাগাতে শুরু করেন, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আপনার জীবন পরিবর্তিত হয়ে যাবে।
অতিমাত্রায় চিন্তা বন্ধ করুন
আপনার মন থেকে যদি সকল ধরণের দুশ্চিন্তা দূর করা যেতো, তাহলে আপনি আরো সম্ভাবনার দিকে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারতেন, তাই না? মানুষের জীবনে সুখ, শান্তি এবং স্বস্তি খুবই জরুরী। বেঁচে থাকতে হলে এসবের মাঝেই আপনাকে বেঁচে থাকতে হবে। আর নয়তো জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। কেমন হয় যদি নিজের জীবনে আরো বেশি সুখ, শান্তি ও স্বস্তি অর্জন করতে পারেন? কোনো ধরণের দুশ্চিন্তা যদি আপনাকে গ্রাস করতে না পারে? কতই না ভালো হবে এটা আপনার জন্য! এবং এটা সম্ভব। এজন্য আপনাকে বেশকিছু গুণ আয়ত্ত করতে হবে। ধৈর্য্যশীলতা, নিজেকে সুন্দরভাবে পরিচালনা, প্রাণোচ্ছলতা এবং উৎসাহী মনোভাব আপনার মাঝে থাকতে হবে।
পরবর্তী আর্টিক্যালগুলোতে আমি আপনাকে এসব নিয়ে জানাবো। নিজেকে কীভাবে আপনি আরো সেরা জায়গায় নিতে পারবেন, সেসব নিয়ে বিস্তর আলোচনা করবো আমি। আপাতত আপনাকে অতিমাত্রায় দুশ্চিন্তা বন্ধে শর্টকার্টে যেসব জিনিসের প্রতি নজর দিতে হবে, সেসব জানিয়ে দিতে চাই।
আগেরটা আগে বলছি—আপনাকে শুরুতেই ধৈর্য্যশীল হতে হবে। ধৈর্য্যশীলতা অনেক বড় একটি গুণ। সহসাই এটা আপনি আয়ত্ত করতে পারবেন না। কেউই পারে না। সময়ের সাথে সাথে একটু একটু করে আপনাকে এই গুণটি আয়ত্ত করে নিতে হবে। এজন্য আপনাকে প্রাণোচ্ছ্বল থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনি যেকোন কাজে ব্যর্থ হতে পারেন। ব্যর্থ হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই বলে অনুশীলন থামিয়ে দেয়া চলবে না। অনুশীলন সবকিছুই সহজ করে দেয়। আজকে যেই কাজটি আপনার পক্ষে জটিল মনে হচ্ছে, কালকে সেটি জটিল মনে হবে না, যদি আপনি নিয়মিত অনুশীলন করতে থাকেন। তাই অনুশীলন চালিয়ে যাবেন। অনুশীলনই একজন মানুষকে নিজের জীবনের সবচাইতে বড় সম্ভাবনা খুজে নিতে প্রস্তুত করে তোলে। এমনকি এখান থেকেই শুরু হয় স্বস্তিদায়ক অবস্থান।
মাঝেমধ্যে দুশ্চিন্তা সবাই ই করে। কিন্তু এটি যখন আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে, বাঁধা দেয় সকল অগ্রগতিতে, তখন আপনাকে বুঝতে হবে আপনি মারাত্মক প্রবলেমে জড়িয়ে গেছেন।